রাজধানীর চকবাজারের অগ্নিকাণ্ডের এলাকায় চুড়িহাট্টা গলিতে স্বজনদের অপেক্ষায় বসে আসেন আশি ঊর্ধ্ব বয়সী এক বৃদ্ধা। তার হাতে একটি মোবাইল ফোন। বারবার তিনি তার নিখোঁজ স্বজনদের নম্বরে ফোন দিচ্ছেন। কিন্তু কোনো সাড়া মিলছে না। আর আহাজারি করছেন বৃদ্ধা। এই বৃদ্ধার নাম মাহবুবা খাতুন।
বৃদ্ধার আহাজারি দেখে অনেকেই তার কাছে জানতে চাচ্ছেন- কে আছে তার?
মাহবুবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিলেন- আমার ভাতিজি সাবরিনা মাহবুবের বাসা ছিল এখানে। ভাতিজির পরিবারের সদস্য ছয়জন।ইসলামপুরে কাপড়ের ব্যবসা করতেন ভাতিজির স্বামী। গতকাল রাত থেকে ফোনে ভাতিজার পরিবারের কাউকে তিনি পাচ্ছেন না। তাই আজিমপুর থেকে এখানে এসেছেন তিনি। কিন্তু পরিবারের কারোরই খোঁজ পাচ্ছেন না তিনি।
বৃদ্ধা মাহবুবা তার পাশ দিয়ে যেই যাচ্ছেন তাকে জিজ্ঞেস করছেন তার স্বজনদের সম্পর্কে। কিন্তু কেউ তাকে কাঙ্ক্ষিত উত্তর দিতে পারছেন না।
পাশেই দেখা যায়, দুই নারী তার এক স্বজনের ছবি বুকে নিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। এভাবেই নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন তারা।
রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের ভবনগুলোতে লাগা ভয়াবহ আগুনে নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৭০ জনের মরদেহ মর্গে এসেছে বলে জানান ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সোহেল মাহমুদ। তিনি বলেন, ডিএনএ টেস্ট করে তাদের পরিচয় শনাক্ত করতে হবে।
বুধবার রাত পৌনে ১১টার দিকে চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের পেছনের একটি ভবন থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে স্থানীয়রা জানান। পরে তা পাশের ভবনগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ রাত ৩টার দিকে স্থানীয়দের সহায়তায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ২০০ কর্মী। তবে ছোট গলি ও পানির স্বল্পতার কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রচণ্ড বেগ পেতে হয়।
#Chawkbazarfire