‘বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে আসার সময় দুই ছেলে মেয়ে ও স্ত্রীকে বলে এসেছি আমরণ অনশনে ঢাকা যাচ্ছি। দাবি পূরণ না হলে ফেরা হবে না। আমার মৃত্যুতেও যদি দাবি পূরণ হয় তোমরা কাঁদবে না। এ দাবির সঙ্গে শুধু টাকা নয়, সম্মানও জড়িত।’
শনিবার রাত ৯টায় রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বেতন বৈষ্যম্য দুরীকরণে আমরণ অনশনরত শিক্ষকদের একজন বক্তৃতাকালে এ কথা বলছিলেন। একই সুরে সুর মিলিয়ে উপস্থিত সবাই ম্যারাথন বক্তৃতাকালে জীবন দিয়ে হলেও দাবি পূরণ করে বাড়ি ফেরার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছিলেন।
প্রধান শিক্ষকের পরের গ্রেডে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণের দাবিতে বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক মহাজোটের ব্যানারে সকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু হয়।
সরজমিনে দেখা যায়, আলো আধারি পরিবেশে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে দেশের শত শত শিক্ষক অবস্থান করেছে। হঠাৎ করে শহীদ মিনারের পাদদেশে তাকালে মনে হবে যেন ‘রোহিঙ্গা’ উদ্বাস্তু আশ্রয় কেন্দ্র। কেউ পলিথিন টানিয়ে, কেউ পেপার বিছিয়ে কেউবা মোমবাতি জ্বালিয়ে শুয়ে বসে আছে। তাদের সবার সামনে দুই একটি করে ব্যাগ।
সারাদিনের ক্লান্তিতে অনেকে মাটিতেই গা এলিয়ে দিয়েছেন। কেউবা শীতে জবুথবু হয়ে পাতলা কম্বল কিংবা চাদর মুড়ি দিয়ে বসে আছেন। কেউবা আবার এদিক সেদিক ঘুরাফেরা করছেন। দুই একজন ভলান্টিয়ার শিক্ষক শহীদ মিনারের মূল বেদিতে যেন জুতা পায়ে কেউ না উঠেন সেদিকে খেয়াল রাখছেন।