মেয়ে জন্মানোর পরই শ্বশুর বাড়ির লোকের অত্যাচার চরমে ওঠে,অবশেষে কুয়োর মধ্যে উদ্ধার গৃহবধূর ঝুলন্ত মৃতদেহ,রতনপুরে চাঞ্চল্য।

Bankura24x7 2022-05-10

Views 126

বাঁকুড়া২৪X৭প্রতিবেদন : শ্বশুরবাড়ীর পাটকুয়ো থেকে এক গৃহবধুর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তুললেন মৃত গৃহবধূর বাড়ীর সদস্যরা৷ মৃত গৃহবধূর নাম সোনালী পরামানিক(২৫)। সোনালী দেবীর পরিবারের অভিযোগ, শ্বশুর বাড়ীর লোকজন বিয়ের কয়েক মাস থেকেই যে অত্যাচার শুরু করে ছিলেন,তা চরমে ওঠে সোনালী দেবী কন্যা সন্তান জন্ম দেওয়ার পর থেকে। এগারো মাসের মেয়েকে নিয়ে ওন্দা থানার রতনপুরে শ্বশুর বাড়ীতেই থাকতেন সোনালী দেবী। সিআরপিএফে কর্মরত স্বামী সোমনাথ পরামানিক রাচিতে থাকেন। এই অবস্থায়, সোনালী দেবীর শ্বশুর হেলু পরামানিক ও শাশুড়ী দুর্গা পরামানিক সোনালী দেবীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতেন।আর এই কাজে ইন্ধন জাগাতেন সোনালী দেবীর ননদ ও নন্দাই এমন অভিযোগ উঠেছে। এবং মেয়ে জন্মানোর পর থেকে এই অত্যাচার দিন,দিন বাড়তে থাকে বলেও দাবী করা হয়েছে সোনালী দেবীর পরিবারের পক্ষ থেকে। গত রাতেও সোনালী দেবীর বাবা কল্যাণ পরামানিক মেয়ের সাথে কথা বললে, মেয়ে তার ওপর শ্বশুর বাড়ীর আত্যাচারের অভিযোগ জানান। এই ঘটনা সামান্য ভেবে, মেয়েকে একটু মানিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন কল্যাণ বাবু । কিন্তু তার পর একমাত্র মেয়েকে এভাবে চিরতরে হারাতে হবে তা ভেবে উঠতে পারেননি তিনি।সোনালী দেবীর দাদা, রাকেশ পরামানিক জানান, আজ ভোর পাঁচটা নাগাদ শ্বশুর বাড়ী থেকে ঘটনার কথা জানানো হয়। তারা তড়িঘড়ি হীড়বাঁধ থেকে রতনপুরে ছুটে আসেন। তখন মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ পুনিশোল ফাঁড়িতে নিয়ে চলে গেছে। সেখানেই তারা মৃতদেহ সনাক্ত করে দাবী করেন,শ্বশুর বাড়ীর লোকজন সোনালীকে খুন করে, দড়ি দিয়ে কুয়োতে ঝুলিয়ে দিয়ে, তা আত্মহত্যার ঘটনা বলে চালাতে চাইছে!তাই খুনের নামলা রুজু করে ঘটনার তদন্তের দাবী তুলেছেন তারা। অন্যদিকে,সোনালী দেবীর বাপের বাড়ীর অন্যান্য আত্মীয় স্বজনরাও মনে করছেন এই ঘটনা নিছক আত্মহত্যা নয়, পরিকল্পিত খুনের ঘটনা। যদিও,ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে তবেই প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে,শ্বশুর বাড়ীর পাড়ায় মিশুকে হিসেবে পরিচিত সোনালীর এভাবে চলে যাওয়া কেও মেনে নিতে পারছেনা।পাশাপাশি, সোনালীর ১১ মাসের ফুটফুটে একরত্তি মেয়েকে দেখে অনেকেই চোখের জল চেপে রাখতে পারেন নি এদিন। আর প্রশ্ন উঠছে? শ্বাশুড়ি নিজে একজন মহিলা হয়েও মেয়ে জন্ম দেওয়ার জন্য,যে ভাবে সোনালীর ওপর অত্যাচার চালিয়েছে তা নিয়েও। যদিও, পুরোটাই তদন্ত ও বিচার সাপেক্ষ। তবুও প্রাথমিক ভাবে রতনপুরের বাসিন্দারা এই ঘটনা টের পাওয়া মাত্র এলাকা জুড়ে ছড়িয়েছে চাঞ্চল্য। সোনালী আর সোমনাথের বিবাহ জীবন সবে মাত্র চার বছরের। তার মধ্যেই এমন মর্মান্তিক পরিনতি হবে তা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না সোনালীর মা,বাবা,দাদা ও আত্মীয়রা। এখন তারা চান, যাদের জন্য সোনালীকে এভাবে পৃথিবী ছেড়ে চলে যেতে হল, তারা যেন কঠোর শান্তি পায়। এদিকে,পুলিশ সুত্রে জানা গেছে, সোনালী দেবীর বাবা থানায় এটি খুনের ঘটনা বলে দাবী করে, তদন্তের আর্জি জানানোর পাশাপাশি, দোষীদের শাস্তির দাবীতে এফআইআর দাখিল করেছেন। এই অভিযোগ পত্রে সোনালী দেবীর স্বামী,শ্বশুর,শাশুড়ী এবং ননদ ও নন্দাইয়ের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ অবশ্য এদিন সকালেই মৃতদেহ উদ্ধারের পর সোনালী দেবীর শ্বশুর ও শ্বাশুড়ি কে আটক করেছে।

Share This Video


Download

  
Report form
RELATED VIDEOS