#Chittagong
সারাদিনের ক্লান্ত নগরবাসী যখন বাড়ির পানে পা বাড়াল ঠিক তখনি বেঁজে উঠলো মায়াবী বাঁশির সুর। কি এক টানে সবাই যেন কয়েক মুহূর্তের জন্য থেমে গেলেন। মনমুগ্ধ হয়ে বাঁশির কাঁপা কাঁপা সুরে ‘আমি তো ভালা না .. ভালা লইয়া থাইকো...’ শুনছিলেন তারা। হৃদয় কাঁপিয়ে সেই সুর উসকে দিচ্ছিল পথচারীদের হাজারও না পাওয়ার বেদনা।
এত শুধু বাঁশির সুর নয়, এ যেন ক্লান্ত চির নিঃসঙ্গ মানুষগুলোর হাজারও গল্প কথা...। তাই তো মুহূর্তের জন্য থমকে গিয়েছিলেন তারা, থমকে গিয়েছিল বন্দরনগরীর প্রেস ক্লাব এলাকা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরের কাছাকাছি ফুটপাতে বসে একমনে বাঁশি বাজাচ্ছিলেন বাঁশি বাদক মোহাম্মদ ইব্রাহীম। সামনে চিরকুটে লেখা ‘পেটের দায়ে বাঁশি শুনাই, সবাইকে সালাম আদাব জানাই’। তার সামনেই একটি প্লাস্টিকের পাত্র রাখা। পথচারীদের মধ্যে থেকে অনেকেই সামর্থ অনুযায়ী টাকা দিচ্ছিলেন।
এক মনে একের পর এক পুরোনো দিনের গানের সুর নিজের বাঁশিতে তুলছিলেন বাঁশি বাদক ইব্রাহীম। কেমন যেন মোহগ্রস্ত হয়ে বাঁশিতে মায়াবী সুর শুনছিলেন পথচারীরা। ইব্রাহীমের বাঁশির সুরে খুঁজে ফিরছিলেন যেন নিজেকেই, নিজের হারানো অতীতকে।
বাঁশিন সুর শুনতে শুনতেই কথা হয় বাঁশি বাদক ইব্রাহীমের সাথে। জানান, তার বয়স ৩০ বছর। বাড়ি হাটহাজারী উপজেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রামের আলাওল পাড়ায়। বিয়ে করেছেন ছয় বছর হলো।
জানতে চেয়েছিলাম বাঁশি বাজানো কি তার পেশা? ইব্রাহীমের সোজাসাপ্টা জবাব, ‘বিষয়টিকে আপনি যেভাবে নেন। তবে এটি আমার নেশা। মানুষ যেমন আজকাল ফেসবুক না চালালে এক মুহূর্ত থাকতে পারেন না। তেমনি আমিও দিনে অন্তত কয়েকবার বাঁশিতে গলা সাধতে না পারলে আমার কিছুই ভালো লাগে না। বাঁশির সঙ্গে আমার প্রেমের সম্পর্ক।’
কিছুক্ষণ চিন্তা করে তিনি আবারও বলেন, ‘হ্যাঁ, বাঁশি পেটের দায়েও বাজাই, তবে ভিক্ষা করি না। কেউ মনের খুশিতে কিছু দিলে নেই, কারো কাছে দাবি করি না।’
তবে কী কারণে পথের ধারে এ বাঁশি বাঁজানো? উত্তরে নিরক্ষর ইব্রাহীমের জবাব, ‘তা শুধু কোনো দার্শনিকের মুখেই মানায়।’
বাঁশি বাদক ইব্রাহীম বলেন, ‘মনের দুঃখ ভুলতে বাঁশি বাজাই, যারা শোনেন তাদের মনেও অনেক দুঃখ। বাঁশি বাজিয়ে আমি যেমন নিজের দুঃখগুলো ভোলার চেষ্টা করি, তেমনি ত