‘এই যে ভাই, যান যান, এখান থেকে চলে যান। এখানে কেউ দাঁড়াবেন না। পারমিশন নাই। ওই মিয়া, ভালোভাবে বললে কথা কানে যায় না, শুনেন না, যান বলতেছি।’ বুধবার সকাল ১১টায় রাজধানীর পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টা নন্দগোপাল রোডের ওয়াহিদ মেনশন ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা উৎসুক জনতাকে ঠিক এভাবেই সরে যাওয়ার তাগাদা দিচ্ছিলেন এক পুলিশ কর্মকর্তা।
ওই কর্মকর্তা প্রথমে ভালোভাবে সরে যেতে বললেও না শুনে দাঁড়িয়ে থাকেন উৎসুক জনতা। এক পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তা রেগে গিয়ে ধমক দিয়ে উপস্থিত সবাইকে সরিয়ে দেন। তবে পুলিশ একটু সরে যেতেই উৎসুক জনতা আবারও সেখানে ভিড় করেন। ধ্বংসস্তূপের সামনে দাঁড়িয়ে চলতে থাকে ৬৯টি তাজা প্রাণ ঝরে যাওয়ার নানা কথা।
গত বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে চকবাজারের চুড়িহাট্টায় ভয়াবহ ওই অগ্নিকাণ্ডে সরকারি তথ্যানুযায়ী ৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৭ জনের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এখনো পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার ভিড় কমেনি। গত কয়েকদিন বিরূপ আবহাওয়া জনিত কারণে রাজধানীতে বৃষ্টি হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় আজ বুধবার সকালেও মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়। বৃষ্টিপাতের মধ্যেও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে উৎসুক জনতা অগ্নিকাণ্ড স্থলে ছুটে যান। সে দিনের সেই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ওয়াহিদ বেনসনের সামনে পড়ে থাকা প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল, রিকশা, ভ্যানগাড়ি দেখিয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন তারা।
বুধবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টি উপেক্ষা করে স্থানীয় ও রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা বয়সী লোকজন অগ্নিকাণ্ড স্থল ঘুরে দেখছেন। ঘটনার সাতদিন পরেও চুড়িহাট্টা মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপন শুরু হয়নি। অধিকাংশ দোকানপাট এখনো বন্ধ।অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে যাওয়া যানবাহন ও মালামাল রাস্তায় পড়ে রয়েছে।
এদিকে আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে চকবাজারসহ পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকার কেমিক্যালের গোডাউন সরানোর অভিযান চালানোর কথা রয়েছে। এ খবরেও উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, সময় না দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হলে তাদের না খেয়ে থাকতে হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যবস