রাত পোহালেই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এর মধ্যে রাজধানীর সড়কগুলো একেবারে ফাঁকা হয়ে পড়েছে। যেন ঈদের আমেজ। যান ও জনজটের রাজধানী একমাত্র দুটি ঈদের সময়ই কোলাহলহীনতার ভিন্ন আমেজে ধরা দেয়। নগরবাসী সেই আমেজ পাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত ভোটের আগের দিন (২৯ ডিসেম্বর, শনিবার)।
শনিবার রাজধানীর পল্টন, মতিঝিল, জিরো পয়েন্ট, যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, টিকাটুলী, সায়েদাবাদসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। বাস চলাচল করছে খুবই কম, হাতে গোনা কয়েকটি। তাও যাত্রী পাচ্ছে না বাসগুলো। সিএনজি চালিত অটোরিকশা ও রিকশাও তেমন চোখে পড়ছে না রাজপথে।
ভোট দিতে রাজধানীর বেশিরভাগ লোক গ্রামে চলে যাওয়ায় মূলত রাজধানী ফাঁকা হয়ে পড়ছে। রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশকে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। অনেকটা স্বয়ংক্রিভাবে যানবাহন চালাচল করছে।
রাজধানীর শ্যামলী যাওয়ার জন্য যাত্রাবাড়ীতে গাবতলী পরিবহনে (২২/বি) দশ মিনিটের মতো বসে থেকে রাগ করে একযাত্রী নেমে যান। তিনি বলেন, ‘যাত্রী নাই, তাও বসে আছে গাড়ি। কতক্ষণ বসে থাকা যায়? নেমে গেলাম। অন্য গাড়িতে যে যাব, তাও তো দেখছি না।’
গাবতলী পরিবহনের এক চালক বলেন, ‘আইজ (আজ) আমগো গাড়ি কম, যাত্রী আরও কম। অনেকক্ষণ বইয়া (বসে) থাকলেও গাড়ি অর্ধেকও ভরে না। যাত্রী ছাড়া টানলেও তো মামা আমগো পোষাইব না।’
সকাল সোয়া ১০টার দিকে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তা মোড়ে কোনো ট্রাফিক পুলিশকে পাওয়া গেল না। পরে দেখা গেল পোস্তগোলা যাওয়ার সড়কের মুখে দাঁড়িয়ে ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবল ও সার্জেন্টরা গল্প করছিলেন। তাদের কয়েকজন সড়কের পরিস্থিতি জানালেও নাম প্রকাশ করতে চাননি। তারা জানান, লোকাল বাস ৫ শতাংশের বেশি চলছে না। আর কোনো দূরপাল্লার গাড়ি চলাচল করছে না। তাই রাস্তা একেবারেই ফাঁকা।
বেলা ১১টার দিকে মতিঝিল ও শাপলা চত্বর ছিল প্রায় যানবাহন শূন্য। এখানে ট্রাফিক পুলিশ সড়কের পাশে বসে আছেন। কর্মব্যস্ত পল্টন, দৈনিক বাংলা ও জিরো পয়েন্টেরও একই অবস্থা। কিছুক্ষণ পর পর সাঁই সাঁই করে চলে যাচ্ছে বাস।
পুরানা পল্টন পুলিশ বক্সে বসে ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ও আর্জেন্টরা বসে আড্ডা দিচ্ছেন। একজন সার্জেন্ট বলেন, যানবাহন চালাচল করছে ঈদের চেয়েও কম। কারণ, ঈদের সময় তো কিছু মানুষ তাও ঢাকায় ঈদ করে কিন্তু এখন তো মনে হয় লোকজন সব ভোট দিতে গ্রামে চলে গেছেন।